দেবেশ রায়
দেবেশ রায় (১৭ ডিসেম্বর, ১৯৩৬ — ১৪ মে, ২০২০) একজন আন্তর্জাতিক বাঙালি ভারতীয় সাহিত্যিক। তিস্তা পারের বৃত্তান্ত উপন্যাসটির জন্য তিনি ১৯৯০ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হন। বাংলা সাহিত্যে তিনি একজন ছকভাঙা আধুনিক ঔপন্যাসিক হিসাবে পরিচিত ছিলেন। দেবেশ রায়ের জন্ম ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলায়, অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম ক্ষিতীশ রায় এবং মাতার নাম অপর্ণা রায়। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পরিবার জলপাইগুড়ি চলে আসেন। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৮৯ এক দশক তিনি পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তাঁর বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় প্রত্যক্ষ বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির সূত্রে শিখেছিলেন রাজবংশী ভাষা। কলকাতা শহরেও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সে একজন গবেষণা সহকর্মী ছিলেন। তাঁর প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় ১৯৫৩ সালে জলার্ক পত্রিকায়। তার প্রথম উপন্যাস যযাতি। তাঁর অর্ধ শতকের বেশি সাহিত্য জীবনে উল্লেখযোগ্য বইগুলো হল: যযাতি, আপাতত শান্তিকল্যাণ হয়ে আছে, মানুষ খুন করে কেন (১৯৭৬), মফস্বলী বৃত্তান্ত (১৯৮০), সময় অসময়ের বৃত্তান্ত (১৯৯৩), তিস্তা পারের বৃত্তান্ত (১৯৮৮), তিস্তা পূরাণ, প্রতিবেদন, ইতিহাসের লোকজন, বরিশালের যোগেন মন্ডল, ইউসুফ জুলেখা , সাংবিধানিক এজলাস (২০১৯), লগন গান্ধার (১৯৯৫), দেবেশ রায়ের কর্ম এবং জীবনের অনুপ্রেরণার উৎস ছিল উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের তিস্তা নদী কেন্দ্রিক রাজবংশী সম্প্রদায়। তিনি ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর তিস্তা পারের বৃত্তান্ত উপন্যাসের জন্যে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি ভাষা সাহিত্য পরিষদ দ্বারা এবং ভুয়ালকা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন। তার অনুুবাদ রোমিয়ো জুুুলিয়েট , ট্র্রয়ের মেয়েরা ।প্রধান প্রবন্ধের বই - আঠার শতকের বাংলা গদ্য ও উপনিবেশের সমাজ ও বাংলা সাংবাদিক গদ্য, বিপরীতের বাস্তব ও রবীন্দ্রনাথের গল্প , উপন্যাস নিয়ে , উপন্যাসের নতুন ধরনের খোঁজে , ব্যক্তিপুরূষেরা , রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর আদিগদ্য , উপন্যাসের বিবিধ সংকট । মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ 'সেতুবন্ধন ' পত্রিকা সম্পাদনার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।