কবিতা, প্রজ্যোতি পরমা
কবিতা, প্রজ্যোতি পরমা একটি ভুল সিদ্ধান্ত প্রচলিত আছে যে, কবিতার বিপরীত শব্দ গদ্য। আসলে তা নয়, কবিতার বিপরীত হলো বিজ্ঞান। আরও সোচ্চারভাবে বললে, ফলিত বিজ্ঞান। কবিরা তা জানেন, শুদ্ধতম কবিরা শুধু শব্দ দিয়ে কবিতা লেখেন না। তাঁরা লেখেন অনুভবের মতো, অস্মিতার রং মিলিয়ে, এক চিত্রিত ছায়াকে তাঁরা দাঁড় করান। পদ্য লেখক ও কবিতা লেখকের মধ্যে একটি লক্ষণরেখা আছে। এই কান্ডজ্ঞান যার নেই, তিনি সৎ কবির দিব্যজ্ঞান লাভ করতে কেবলই মরুগামী হন। একজন মিষ্টিপ্রেমী আস্ত একটা রসগোল্লা মুখের ভেতরে ছেড়ে দেন। একজন বন্ধুপ্রেমী রসগোল্লাকে দু-ভাগ করে দু-জনে মিলে খান। আবার পাঁচজন কিশোর একটি মিষ্টিকেই পাঁচ ভাগ করে খান। এই যে তিন-রকম বিন্যাসে খাওয়া হলো— এতে কী স্বাদের কোন তারতম্য হলো? সকলেই মিষ্টির স্বাদ এক-রকমই অনুভব করেছেন। এভাবেই ভালো কবিতার ভেতর থেকে শুদ্ধ কবিতা, শুদ্ধ কবিতার ভেতর থেকে কালজয়ী কবিতার সৃষ্টি হয়। ‘কবিতা, প্রজ্যোতি পরমা’ প্রবন্ধ গ্রন্থে নানা ভাবুক নানা ভাবে কবিতার রূপ-রস-বক্রোক্তি ইত্যাদির স্বরূপ অন্বেষণ করেছেন। সকলেই তাঁদের অনুভবের অতি নিয়োজিত আয়তনকে আতত করেছেন। চিন্তকদের ধর্ম হচ্ছে ভিন্ন চিন্তাকে সম্মান করা। সে কারণেই কোনো মতামতকেই অস্বীকার করা অভিপ্রেত নয়। বরঞ্চ বিপ্রতীপভাবেই আমরা পথিক হয়েছি। চিন্তকের কোনো স্বদেশ নেই, ভাবনার শেষ বিশেষ সীমা নেই। ফলে, চিত্ররূপময় এক আস্বাদ্য গদ্যগ্রন্থ হয়েছে এই গ্রন্থ। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে মহামতী প্লেটোর কথা, যিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, যাঁরা নিজে কবিতা লিখেন না- তাঁরা নন, শুধু সাত কবিকেই খল্লযুদ্ধে আহ্বান করা যায়। কবিতার বৈভবতী শৈলী শুধু কবিরাই বুঝেন। মতবাদিক কিংবা নান্দনিক দু-পক্ষকেই আমরা শ্রদ্ধা করি। কবিতার জন্যে তুলনাহীন ভালোবাসাই হচ্ছে এসব শব্দপটুয়ার জীবন প্রচ্ছদ। জীবনানন্দ লিখে ছিলেন ‘কবিতা ও জীবন একই জিনিসের দু-রকম উৎসারণ।’ এ-উক্তিকে ধ্রুবপদ রূপে মান্য করা যায়। স্থান-কাল ও পাত্রের পরমতাকে আমরা আহ্বান করেছি এই প্রবন্ধমালায়। পাঠক শুধু খোঁজে নেবেন নিজের একান্ত কণ্ঠস্বরকে। জ্যোতি যখন প্রকৃষ্ট রূপে উদ্ভাসিত হয়, তখনই হয় প্রজ্যোতি। পরমা যখন আরাধ্য হয় সেই সময় হয় দিব্যতাগন্ধী। লিটল ম্যাগাজিন ‘বুনন’ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংখ্যায় যেসব কবিতাবিষয়ক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল প্রধানত সেই সব প্রবন্ধ এখানে গ্রন্থিত হয়েছে। তার বাইরেও কিছু প্রবন্ধ যুক্ত করা হয়েছে। মূল প্রতিপাদ্য একটাই— কবিতা নিয়ে ভাবনা। বিষমবাহু ত্রিভুজের মতো ভাব-প্রবাহ কল্লোলিত এখানে আমাদের সন্নিকটবর্তী বন্ধুগণ ও অগ্রজ প্রান্তজন সবই আছেন এক সমতলে। কেউ উচ্চকন্ঠ, কেউ নম্র, কেউ বিনীত, কেউ মত প্রকাশে উদাত্ত। ফলে এক সমস্যার উচ্চারণকলাকে সূর্যস্নাত পৃথিবীর কাছে নতজানু হতে দেখি। এই দেখা বহুবর্ণময়, বঙ্কিম, বিস্তার প্রধান, আবার মিতবাক, মৃদুভাষী। এসব নিয়েই ‘কবিতা, প্রজ্যোতি পরমা।’ আমরা চাই চিন্তার জগতকে প্রসারিত করতে। কখনো সংকীর্ণতা যেন আমাদের পথকে বন্ধ করে না-দেয়। মুক্ত চিন্তার কর্ষণ করা আমাদের কর্তব্য মনে করি।
কবিতা, প্রজ্যোতি পরমা একটি ভুল সিদ্ধান্ত প্রচলিত আছে যে, কবিতার বিপরীত শব্দ গদ্য। আসলে তা নয়, কবিতার বিপরীত হলো বিজ্ঞান। আরও সোচ্চারভাবে বললে, ফলিত বিজ্ঞান। কবিরা তা জানেন, শুদ্ধতম কবিরা শুধু শব্দ দিয়ে কবিতা লেখেন না। তাঁরা লেখেন অনুভবের মতো, অস্মিতার রং মিলিয়ে, এক চিত্রিত ছায়াকে তাঁরা দাঁড় করান। পদ্য লেখক ও কবিতা লেখকের মধ্যে একটি লক্ষণরেখা আছে। এই কান্ডজ্ঞান যার নেই, তিনি সৎ কবির দিব্যজ্ঞান লাভ করতে কেবলই মরুগামী হন। একজন মিষ্টিপ্রেমী আস্ত একটা রসগোল্লা মুখের ভেতরে ছেড়ে দেন। একজন বন্ধুপ্রেমী রসগোল্লাকে দু-ভাগ করে দু-জনে মিলে খান। আবার পাঁচজন কিশোর একটি মিষ্টিকেই পাঁচ ভাগ করে খান। এই যে তিন-রকম বিন্যাসে খাওয়া হলো— এতে কী স্বাদের কোন তারতম্য হলো? সকলেই মিষ্টির স্বাদ এক-রকমই অনুভব করেছেন। এভাবেই ভালো কবিতার ভেতর থেকে শুদ্ধ কবিতা, শুদ্ধ কবিতার ভেতর থেকে কালজয়ী কবিতার সৃষ্টি হয়। ‘কবিতা, প্রজ্যোতি পরমা’ প্রবন্ধ গ্রন্থে নানা ভাবুক নানা ভাবে কবিতার রূপ-রস-বক্রোক্তি ইত্যাদির স্বরূপ অন্বেষণ করেছেন। সকলেই তাঁদের অনুভবের অতি নিয়োজিত আয়তনকে আতত করেছেন। চিন্তকদের ধর্ম হচ্ছে ভিন্ন চিন্তাকে সম্মান করা। সে কারণেই কোনো মতামতকেই অস্বীকার করা অভিপ্রেত নয়। বরঞ্চ বিপ্রতীপভাবেই আমরা পথিক হয়েছি। চিন্তকের কোনো স্বদেশ নেই, ভাবনার শেষ বিশেষ সীমা নেই। ফলে, চিত্ররূপময় এক আস্বাদ্য গদ্যগ্রন্থ হয়েছে এই গ্রন্থ। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে মহামতী প্লেটোর কথা, যিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, যাঁরা নিজে কবিতা লিখেন না- তাঁরা নন, শুধু সাত কবিকেই খল্লযুদ্ধে আহ্বান করা যায়। কবিতার বৈভবতী শৈলী শুধু কবিরাই বুঝেন। মতবাদিক কিংবা নান্দনিক দু-পক্ষকেই আমরা শ্রদ্ধা করি। কবিতার জন্যে তুলনাহীন ভালোবাসাই হচ্ছে এসব শব্দপটুয়ার জীবন প্রচ্ছদ। জীবনানন্দ লিখে ছিলেন ‘কবিতা ও জীবন একই জিনিসের দু-রকম উৎসারণ।’ এ-উক্তিকে ধ্রুবপদ রূপে মান্য করা যায়। স্থান-কাল ও পাত্রের পরমতাকে আমরা আহ্বান করেছি এই প্রবন্ধমালায়। পাঠক শুধু খোঁজে নেবেন নিজের একান্ত কণ্ঠস্বরকে। জ্যোতি যখন প্রকৃষ্ট রূপে উদ্ভাসিত হয়, তখনই হয় প্রজ্যোতি। পরমা যখন আরাধ্য হয় সেই সময় হয় দিব্যতাগন্ধী। লিটল ম্যাগাজিন ‘বুনন’ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংখ্যায় যেসব কবিতাবিষয়ক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল প্রধানত সেই সব প্রবন্ধ এখানে গ্রন্থিত হয়েছে। তার বাইরেও কিছু প্রবন্ধ যুক্ত করা হয়েছে। মূল প্রতিপাদ্য একটাই— কবিতা নিয়ে ভাবনা। বিষমবাহু ত্রিভুজের মতো ভাব-প্রবাহ কল্লোলিত এখানে আমাদের সন্নিকটবর্তী বন্ধুগণ ও অগ্রজ প্রান্তজন সবই আছেন এক সমতলে। কেউ উচ্চকন্ঠ, কেউ নম্র, কেউ বিনীত, কেউ মত প্রকাশে উদাত্ত। ফলে এক সমস্যার উচ্চারণকলাকে সূর্যস্নাত পৃথিবীর কাছে নতজানু হতে দেখি। এই দেখা বহুবর্ণময়, বঙ্কিম, বিস্তার প্রধান, আবার মিতবাক, মৃদুভাষী। এসব নিয়েই ‘কবিতা, প্রজ্যোতি পরমা।’ আমরা চাই চিন্তার জগতকে প্রসারিত করতে। কখনো সংকীর্ণতা যেন আমাদের পথকে বন্ধ করে না-দেয়। মুক্ত চিন্তার কর্ষণ করা আমাদের কর্তব্য মনে করি।
Writer |
|
Publisher |
|
ISBN |
9789849857327 |
Language |
Bengali / বাংলা |
Country |
Bangladesh |
Format |
Hardcover |
Edition |
1st |
First Published |
2025 |
Pages |
112 |